রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Picture
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) (২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) বাংলার দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। তিনি গুরুদেব, কবিগুরুবিশ্বকবি অভিধায় নন্দিত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা সাহিত্যসংগীতে রবীন্দ্রনাথ এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। নোবেল ফাউন্ডেশন তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিল একটি "গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ" রূপে।

রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিল কলকাতার এক পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি প্রথম কাব্যরচনায় প্রবৃত্ত হন। ১৯৭৭ সালে মাত্র ষোলো বছর বয়সে "ভানুসিংহ" ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। প্রথম ছোটোগল্প ও নাটক রচনা করেন এই বছরেই। রবীন্দ্রনাথ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তাঁর মতাদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর বিচিত্র ও বিপুল সৃষ্টিকর্ম এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর মধ্য দিয়ে।

বঙ্গীয় শিল্পের আধুনিকীকরণে তিনি ধ্রুপদি ভারতীয় রূপকল্পের দূরুহতা ও কঠোরতাকে বর্জন করেন। নানান রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয়কে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে তাঁর উপন্যাস, ছোটোগল্প, সংগীত, নৃত্যনাট্য, পত্রসাহিত্য ও প্রবন্ধসমূহ। তাঁর বহুপরিচিত গ্রন্থগুলির অন্যতম হল গীতাঞ্জলি, গোরা, ঘরে বাইরে, রক্তকরবী, শেষের কবিতা ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথের কাব্য, ছোটোগল্প ও উপন্যাস গীতিধর্মিতা, সহজবোধ্যতা, ধ্যানগম্ভীর প্রকৃতিবাদ ও দার্শনিক চিন্তাধারার জন্য প্রসিদ্ধ। তাঁর রচিত গান আমার সোনার বাংলাজনগণমন-অধিনায়ক জয়হে যথাক্রমে বাংলাদেশভারত রাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত।


আরো জানতে চাইলে এখানে click
করুন ।


কাজী নজরুল ইসলাম

Picture
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম (মে ২৫, ১৮৯৯আগস্ট ২৯, ১৯৭৬), বাঙালি কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবিপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশ - দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতাগান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি বলা হয়। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচার এবং দাসত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তাঁর কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে - কাজেই "বিদ্রোহী কবি"।

নজরুল এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় এক মসজিদে মুয়জ্জিন হিসেবে কাজও করেছিলেন। বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করতে যেয়ে তিনি কবিতা, নাটক এবং সাহিত্য সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এসময়ে তিনি কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মত কবিতা; ধূমকেতুর মত সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী। এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্য তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। নজরুল প্রায়ে ৩০০০ গান রচনা এবং সুর করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি" নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়। মধ্যবয়সে তিনি পিক্‌স ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে দীর্ঘদিন তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন। এসময়ে তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


আরো জানতে চাইলে এখানে click করুন ।




বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখা কবি সাহিত্যিক